টানা ছুটিতে সৈকতে মেতেছেন ভ্রমণপিপাসুরা

টানা ছুটিতে সৈকতে মেতেছেন ভ্রমণপিপাসুরা
টানা ৩ দিনের ছুটিতে ফের সৈকত শহর কক্সবাজারে ঢল নেমেছে পর্যটকের। আনন্দে মেতেছেন সৈকতের নোনাজলে। তীব্র গরমও আনন্দে বাঁধ সাজতে পারেনি ভ্রমণপিপাসুদের। আর পর্যটকের আগমনে দারুণ খুশি সৈকতের হকাররা। তবে সৈকতের নোনাজলে গোসল করতে গিয়ে নির্দেশনা মেনে চলার পরামর্শ লাইফ গার্ড সংস্থার। 

সাগরের নোনাজল; মাঝে মাঝে ঢেউ আছড়ে পড়ছে উপক‚লে। আর এই ঢেউয়ে মেতেছেন ভ্রমণপিপাসুরা। বিশেষ  করে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন, শবে বরাত ও সাপ্তাহিক ছুটিতে ১৭-১৯ মার্চ তিন দিন সরকারি ছুটি। এ কারণে টানা ছুটিতে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে ঢল নেমেছে পর্যটকের। সৈকতের সবকটি পয়েন্টে পরিবার-পরিজন বা প্রিয়জনকে সঙ্গে নিয়ে দলে দলে সৈকতের নোনাজলে নামছেন তারা। আর আনন্দে সময় পার করছেন সাগরে।
আগত পর্যটক সোবহান আহমেদ বলেন, টানা ছুটিতে পরিবার নিয়ে কক্সবাজার ছুটে আসে। দুইদিন এখানে ঘুরে ফিরে আবারও ঢাকায় ফিরব। টানা ছুটিতে পরিবারকে সময় দেয়াটায় মূল উদ্দেশ্যে।
আরেক পর্যটক ইব্রাহিম বলেন, তীব্র গরম পড়ছে। তারমাঝেও কক্সবাজার সৈকতে ঘুরে বেশ মজা পাচ্ছি। কিছুক্ষণ নোনাজলে গোসল করছি, আবার বালিয়াড়িতে উঠে বালি নিয়ে খেলা করছি। ছুটিটা বেশ উপভোগ করছি কক্সবাজার এসে।
তরিকুল ইসলাম এক চাকুরিজীবি বলেন, সবসময় কর্মব্যস্ত থাকতে থাকতে ইট-পাথরের দালানে আর ভালো লাগছিল না। তাই টানা ছুটিতে সৈকতে ছুটে আসা। এখানে মুক্ত আকাশ, বিশাল সৈকত ও নীল জলরাশি অনেক ভালো লাগছে।
পর্যটক আগমনে সৈকতে চাঙা হয় পর্যটন ব্যবসা। টানা তিনদিনের ছুটিতে বিপুল সংখ্যক পর্যটক ছুটে আসায় দারুণ খুশি সৈকতের ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে ওয়াটার বাইক, ফটোগ্রাফার, কিটকট ব্যবসায়ী ও হকাররা ব্যস্ত সময় পার করছেন।
ওয়াটার বাইক চালক সোনা মিয়া বলেন, পর্যটক আসলেই আমাদের ব্যবসা হয়। টানা ছুটিতে কক্সবাজারে পর্যটক আসাতে আমরা খুব খুশি। এখন ব্যবসাও ভালো হচ্ছে।

রহিম উদ্দিন নামের এক ফটোগ্রাফার বলেন, সাপ্তাহিক ছুটির দিন ছাড়া অন্যান্য দিনগুলোতে পর্যটকদের ছবি ৭’শ থেকে ১ হাজার টাকা আয় করতাম। এখন টানা ছুটির প্রথম দিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পর্যটকদের ছবি তোলে দুই হাজার টাকা আয় করেছি। সন্ধ্যা পর্যন্ত আরও দেড় হাজার টাকা আয় হবে আশা করছি।  
তবে সৈকতের আনন্দ করতে এসে সমুদ্রস্নানে দুর্ঘটনা এড়াতে নির্দেশনা মেনে চলার পরামর্শ লাইফ গার্ড সংস্থার।
সী সেইফ লাইফ গার্ডের সিনিয়র লাইফ গার্ড ওমর ফারুক বলেন, শীত মৌসুম শেষ হবার পর থেকে সাগরের ঢেউয়ে বেড়েছে এবং কিছুটা উত্তালও। টানা ছুটিতে বিপুল সংখ্যক পর্যটক আসায় সীমিত লাইফ গার্ড কর্মী দিয়ে এত মানুষের সমুদ্রস্নানে নিরাপত্তা দেয়াটা অনেক কঠিন। তারপরও আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। তবে সমুদ্রস্নানে নির্দেশনা ও লাইফ গার্ড কর্মীদের পরামর্শ মেনে চলার অনুরোধ করেন তিনি।
কক্সবাজারে সাড়ে ৪ শতাধিক হোটেল মোটেল রিসোর্ট ও গেস্ট হাউস রয়েছে। যার মধ্যে তারকামানের হোটেলগুলো শতভাগ রুম বুকিং।
এদিকে কক্সবাজারে পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশের সঙ্গে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। মাঠে রয়েছে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সিসিটিভির আওতায় আনা হয়েছে পর্যটন স্পটগুলো। পর্যটকদের স্বাস্থ্যবিধি মানতে সর্বদা সচেতনতামূলক মাইকিং করা হচ্ছে। অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি রোধে সাদা পোশাকে এবং পর্যটক বেশেও পুলিশের নারী সদস্যরা সৈকতে অবস্থান করছেন।
কক্সবাজার টুরিস্ট পুলিশ জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, “টানা ছুটিতে সৈকত এলাকা, হোটেল মোটেল জোন ও পর্যটন স্পটগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। রাতের বেলায় মোটরসাইকেল যোগে টহলে থাকবে পুলিশ। আশা করি, পর্যটকরা স্বাচ্ছন্দে টানা ছুটিতে কক্সবাজার ঘুরতে পারবেন।”
আপনার মন্তব্য দিন

প্রকাশিত মন্তব্য

পর্যটন

পরিচালনা সম্পাদক: মোহাম্মদ মুজিবুল ইসলাম, বার্তা সম্পাদক: মোহাম্মদ নজিবুল ইসলাম ও সহ সম্পাদক: ড. মোঃ আশরাফুল ইসলাম (সজীব)

© 2024 Dainik Coxsbazar, All Rights Reserved.